
একজন ওলি ও পান দোকানদারের ঘটনা।
মোঘল আমলে দিল্লীর শাহী জামে মসজিদে একজন আল্লাহর ওলি ইমামতি করতেন, প্রত্যেকদিন একটি পানের দোকানে গিয়ে তিনি পান খেতেন। একদিন দোকানদার ইমাম সাহেবের নিকট দোয়া প্রার্থনা করলেন, অতপরঃ ইমাম সাহেব দোয়া করলেন- “ইছকো ইনসান বানাদো আল্লাহ।” অর্থঃ হে আল্লাহ, এ কে মানুষ বানিয়ে দাও।
দোকানদার প্রতিদিনই দোয়া চায়, ইমাম সাহেবও প্রতিদিন একই দোয়া করেন। একদিন, বিনয়ের সাথে, দোকানদার প্রশ্নঃ করলো “হুজুর, আমি দোয়া চাই, আমার ব্যবসাতে যেনো উন্নতি হয়। কিন্তু, আপনি দোয়া করেন, “আমাকে মানুষ বানিয়ে দেয়ার জন্য।” আমার মা মানুষ, বাবা মানুষ, আমি মানুষ। তাহলে এই দোয়া কেন করেন প্রতিদিন?
ইমাম সাহেব মুঁচকি হেসে তিনার মাথার পাগড়ী খানা খুলে দোকানদারের মাথায় দিয়ে বললেন:- চোখ বন্ধ করে বলো কী দেখতে পাও?
দোকানদারের চিৎকার দিয়ে বলে- খোদার কসম, সমগ্র দুনিয়া হাতের তালুর মধ্যে দেখতে পাচ্ছি। আর সমগ্র দুনিয়া পশু দ্বারা ভরপুর। অনেক দূরে দূরে দু-একজন মানুষ দেখা যায়। কারো অর্ধেক সূরত মানুষের, বাকি অর্ধেক পশুর। এখন আমি বুঝতে পারছি, কেন আপনি আমাকে মানুষ বানিয়ে দেয়ার জন্য দোয়া করেন।
দোকানদার পাগরড়ী খুলে আবার জিজ্ঞেস করলো, হুজুর এই কোটি কোটি পশুর মধ্যে আমি কী রূপী পশু, তা দেখতে চাই।
ইমাম সাহেব আবার উনার টুপিটা দোকানদারের মাথায় দিলেন। দোকানদার নিজেকে একটি বানর রুপে দেখতে পেলো।
তারপর ইমাম সাহেব বলেন- “আমি যখন পান খেতে আসি, দেখি একটি বানর বসে বসে পান বিক্রী করছে, আর বলছে- “হুজুর আমার জন্য দোয়া করুন। তাই দয়াপরবশ হয়ে দোয়া করি- “খোদা, একে মানুষ বানিয়ে দাও।”
এই ঘটনাটি গানটির এক লাইন কথা মনে পড়ে গেলো- “মানুষ ধর, মানুষ ভজ ওরে আমার পাগল মন।”
তথ্যসূত্রঃ- জামালুল কুলুব
